হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে দুর্দান্ত স্কোর গড়ে চলতি আইপিএলের অন্যতম ফর্মে থাকা দল পাঞ্জাব। শ্রেয়াস আইয়ার ৩৬ বলে ৮২, প্রভসিমরান সিং ২৩ বলে ৪২, প্রিয়াংশ আর্য ১৩ বলে ৩৬ এবং মার্কাস স্টয়নিস ১১ বলে ৩৪ রান করে দলকে ৬ উইকেটে ২৪৫ রানে নিয়ে যান।
তবে সেই বিশাল লক্ষ্যও খুব ছোট করে দেখালেন অভিষেক শর্মা ও ট্রাভিস হেড। অভিষেক খেলেন ১৪১ রানের দানবীয় ইনিংস, আর হেড করেন ৬৬ রান। এই জুটি ৯ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই হায়দরাবাদকে এনে দেন এক অবিশ্বাস্য জয়।
রেকর্ড: ৫০/৩.০ ওভার
মাত্র ৩ ওভারে দলীয় ৫০ রান তোলে পাঞ্জাব। যা আইপিএলে তাদের ইতিহাসে তৃতীয় দ্রুততম দলীয় ফিফটি। এর আগে ২০১১ সালে রাজস্থান ও ২০১৮ সালে দিল্লির বিপক্ষে তারা ২.৫ ওভারে দলীয় ৫০ করেছিল।
পাওয়ার-প্লে স্কোর: ৮৯/১
প্রথম ৬ ওভারে পাঞ্জাব তোলে ৮৯ রান ১ উইকেটে, যা আইপিএলে তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাওয়ার প্লে স্কোর। গত আসরে কলকাতার বিপক্ষে তারা করেছিল সর্বোচ্চ ৯৩/১।
শামির খরুচে স্পেল: ৪ ওভার ৭৫/০
হায়দরাবাদের মোহাম্মদ শামির জন্য ম্যাচটি ছিল দুঃস্বপ্ন। ৪ ওভারে ৭৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি। আইপিএলের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্পেল। চলতি আসরেই জোফ্রা আর্চার করেছিলেন ৪-৭৬-০।
পাঞ্জাবের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ: ২৪৫/৬
এই ম্যাচে করা ২৪৫ রান পাঞ্জাবের আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। তবুও তারা হার মানে হায়দরাবাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে। তাদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ২৬২ রান, গত আসরে।
অভিষেক শর্মার রেকর্ড: ১৪১/৫৫

অভিষেক শর্মা মাত্র ১৯ বলে পূর্ণ করেন হাফ সেঞ্চুরি। এটি তার দ্বিতীয় দ্রুততম ও হায়দরাবাদের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় দ্রুততম। অভিষেক ও হেড দুজনেরই রয়েছে ২০ বলের নিচে তিনটি করে ফিফটি, যা যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কেবল নিকোলাস পুরানের ২০ বলের নিচে রয়েছে চারটি ফিফটি।
অভিষেক-হেডের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে একের পর এক রেকর্ড গড়েছে হায়দরাবাদ:
- ১৭১ রানের জুটি: অভিষেক শর্মা ও ট্রাভিস হেড মিলে ওপেনিংয়ে গড়েছেন ১৭১ রানের বিশাল পার্টনারশিপ, যা হায়দরাবাদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি। এর আগে ২০১৯ সালে বেয়ারস্টো-ওয়ার্নার করেছিলেন ১৮৫ রানের জুটি।
- ৪০ বলে সেঞ্চুরি: অভিষেক খেলেছেন মাত্র ৪০ বলে সেঞ্চুরি, যা আইপিএলের ইতিহাসে পঞ্চম দ্রুততম। সবচেয়ে দ্রুত সেঞ্চুরির রেকর্ড গেইলের (৩০ বল)। বাকিদের মধ্যে পাঠান (৩৭), মিলার (৩৮), হেড ও প্রিয়াংশ (৩৯) রয়েছেন।
- বাউন্ডারি বৃষ্টি: অভিষেক এক ইনিংসে হাঁকিয়েছেন ২৪টি বাউন্ডারি আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গেইলের ৩০ বাউন্ডারিই এখনো শীর্ষে। একই ম্যাচে অভিষেকের ১০টি ছক্কা হায়দরাবাদের পক্ষে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।
- ভারতীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংস: অভিষেকের ১৪১ রানের ইনিংস এখন আইপিএলে কোনো ভারতীয় ব্যাটারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। পুরো টুর্নামেন্ট ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ গেইলের ১৭৫* এবং ম্যাককালামের ১৫৮* এর পরেই।
হায়দরাবাদ ২৪৬ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে জয় পেয়েছে, যা আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি পাঞ্জাবের, যারা গত আসরে ২৬২ রান তাড়া করে জিতেছিল কলকাতার বিপক্ষে।
হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে পাঞ্জাবের বিপক্ষে এটি তাদের নবম জয়, যা কোনো নির্দিষ্ট ভেন্যুতে আইপিএলে পাঞ্জাবের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সমান ৯টি জয় রয়েছে কলকাতারও, পাঞ্জাবের বিপক্ষে ইডেনে। শীর্ষে রয়েছে মুম্বাই, যারা ওয়ানখেড়েতে কলকাতার বিপক্ষে ১০টি ম্যাচ জিতেছে।
Also Check: চোটের কারণে পিএসএল থেকে ছিটকে পড়েছেন লিটন দাস