আধুনিক ফুটবল শুধু গোল, অ্যাসিস্ট বা ট্রফি জয়ের গল্পেই সীমাবদ্ধ নয়। মাঠের বাইরে ফুটবলারদের ব্যক্তিগত জীবনও ভক্তদের মাঝে সমান আলোচনার জন্ম দেয়। বিশেষ করে এমন ফুটবলাররা, যারা বিয়ের আগেই সন্তানের বাবা হয়েছেন এই বিষয়টি বহুবার মিডিয়া এবং সমর্থকদের নজর কেড়েছে। বিশ্বের বহু তারকা খেলোয়াড়, যাদের নাম আপনি প্রতিদিন শুনে থাকেন, তারাও এই তালিকার অংশ। যদিও বিষয়টি একসময় সমাজে বিতর্ক তৈরি করত, কিন্তু সময় বদলেছে, দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে, আর এখন এটি আধুনিক জীবনের এক বাস্তব ও স্বাভাবিক অংশ হিসেবে মানুষ গ্রহণ করছে।
এই আর্টিকেলে আমরা সেই পাঁচজন সুপারহিট তারকা ফুটবলারের জীবনের একটি ভিন্ন দিক দেখবো। যাদের পরিবার, সম্পর্ক এবং দায়িত্ব নেয়ার গল্প প্রমাণ করে Footballers Who Became Fathers Before Marriage শুধু মাঠে নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বড় হওয়া এবং দায়িত্বশীল হওয়ার উদাহরণ তৈরি করেছেন।
5. Raheem Sterling

Raheem Sterling ইংল্যান্ডের অন্যতম প্রতিভাবান আক্রমণাত্মক খেলোয়াড়, যিনি দ্রুত গতি, দুর্দান্ত ড্রিবলিং এবং ম্যাচে হঠাৎ পরিবর্তন আনার ক্ষমতার জন্য পরিচিত। কিন্তু তার ব্যক্তিগত জীবনও ঠিক ততটাই আলোচিত। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তার প্রথম কন্যা সন্তানের জন্ম হয় যে বয়সে অনেক তরুণ নিজের ক্যারিয়ার শুরু করতেও হিমশিম খায়। এখান থেকেই শুরু একটি গল্প, যা তুলে ধরে সেইসব Footballers Who Became Fathers Before Marriage–এর উদাহরণ।
Sterling-এর দীর্ঘদিনের সঙ্গী Paige Milian একজন মডেল ও রিয়েল-এস্টেট পরামর্শক। তাদের সম্পর্ক বহুদিন ধরে চললেও এখনও আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়নি। কিন্তু তারা ইতিমধ্যে তিন সন্তানের বাবা-মা, এবং তাদের পারিবারিক বন্ধন কতটা দৃঢ় তা Sterling-এর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলোর মাধ্যমে সহজেই বোঝা যায়।
Sterling বারবার বলেছেন যে বাবা হওয়া তাকে বদলে দিয়েছে। একজন ফুটবলার হিসেবে তার চাপ, ব্যস্ততা, পারফরম্যান্স সবকিছুর মাঝেও তিনি পরিবারকে সবচেয়ে বড় শক্তি মনে করেন। তিনি সন্তানদের সাথে সময় কাটানোকে অগ্রাধিকার দেন, যা প্রমাণ করে যে দায়িত্ব নেয়ার ক্ষেত্রে বিয়ের কাগজপত্র সবসময়ই মূল বিষয় নয়।
সমাজে একসময় “বিয়ের আগে সন্তান” নিয়ে নানা সমালোচনা ছিল। কিন্তু Sterling-এর মতো মানুষরা দেখিয়েছেন যে ভালবাসা, দায়িত্ব এবং পরিবারের জন্য নিবেদন থাকলে সম্পর্কের আনুষ্ঠানিকতা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এজন্যই তিনি আলোচনায় থাকেন সেই সব Footballers Who Became Fathers Before Marriage–এর একজন সত্যিকারের উদাহরণ হিসেবে।
4. Sergio Ramos

রিয়াল মাদ্রিদ ও স্পেন জাতীয় দলে দীর্ঘ সময়ের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার Sergio Ramos তার আগ্রাসী খেলার ধরণ এবং নেতৃত্বগুণের জন্য বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। কিন্তু মাঠের বাইরে তার পারিবারিক জীবনও ভক্তদের কাছে সমান আকর্ষণীয়। তিনি এবং তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী, জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপিকা Pilar Rubio, তিন সন্তানের বাবা-মা হয়েছিলেন বিয়ের আগেই।
Ramos এবং Rubio বহু বছর একসাথে ছিলেন, সন্তানদের বড় করেছেন, ভ্রমণ করেছেন, অনুষ্ঠান attended করেছেন সবকিছুই করেছিলেন একটি প্রতিষ্ঠিত পরিবারের মতো। এ কারণেই ২০১৯ সালে যখন তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেন, তখনও অনেকের কাছে বিষয়টি ছিল কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। এর অনেক আগেই তারা সমাজের চোখে একটি পরিপূর্ণ পরিবার হিসেবে ধরা দিতেন।
Ramos বহুবার মিডিয়াকে বলেছেন, “একটা সার্টিফিকেট পরিবার বানায় না ভালবাসা, শ্রদ্ধা এবং দায়িত্বই একটি পরিবার তৈরি করে।” তার এই বক্তব্যই তাকে রাখে সেইসব Footballers Who Became Fathers Before Marriage–এর অন্যতম প্রতিনিধির তালিকায়।
তার ব্যস্ত ক্যারিয়ারের মাঝেও শিশুদের স্কুল, বিনোদন, স্বাস্থ্য সবকিছুতেই তিনি নজর রাখেন। ভক্তরা তাকে শুধু মাঠের “যোদ্ধা” হিসেবেই নয়, একজন কোমল-মন বাবা হিসেবেও সম্মান করে। তিনি প্রমাণ করেছেন যে আধুনিক যুগে পরিবার গঠনের ধরন বদলে গেলেও ভালোবাসার গুরুত্ব কখনোই বদলায় না।
Also Read:
- Top 5 Smallest Football Stadiums in the World
- Top 5 Most Impressive Records of Neymar in Football History
- Top 5 Greatest Female Footballers in History
3. Cesc Fabregas

প্রাক্তন আর্সেনাল এবং বার্সেলোনা তারকা Cesc Fabregas-এর প্রেমকাহিনি শুরু হয় ২০১১ সালে, যখন তিনি পরিচিত হন Daniella Semaan-এর সাথে। Daniella তখন দুই সন্তানের মা এবং Fabregas-এর থেকে ১২ বছর বড়। এই সম্পর্ক শুরু থেকেই আলোচনায় আসে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি হয়ে ওঠে ফুটবল দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর গল্পগুলোর একটি।
Fabregas এবং Daniella বিয়ের আগেই তিন সন্তানের বাবা-মা হন। শুধু তাই নয়, Daniella-র আগের দুই সন্তানকেও তারা একসাথে বড় করেন। এটাই তাকে বিশ্বের সবচেয়ে দায়িত্বশীল Footballers Who Became Fathers Before Marriage এর মধ্যে একটি শক্তিশালী উদাহরণে পরিণত করে।
Fabregas বহুবার বলেছেন যে বাবা হওয়া তার জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ। ম্যাচ শেষ করে বাড়ি ফেরার পর সন্তানদের হাসি তাকে মানসিক শক্তি দেয়, যা কোনো ট্রফি দিয়েও পাওয়া যায় না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার পোস্টগুলোতে পরিবার-প্রেম স্পষ্ট।
Fabregas-এর গল্প সমাজকে দেখায় যে রক্তের সম্পর্কই পরিবার তৈরি করে না ভালবাসা, দায়িত্ব এবং গ্রহণযোগ্যতাই প্রকৃত পরিবার গঠন করে। এজন্যই তার নাম বারবার উঠে আসে সেই সব Footballers Who Became Fathers Before Marriage–এর তালিকায়।
2. Cristiano Ronaldo

Cristiano Ronaldo নামটাই যথেষ্ট। ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এই সুপারস্টার শুধু মাঠে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও বহুল আলোচিত। তার প্রথম সন্তান Cristiano Jr.–এর জন্ম হয় ২০১০ সালে। কিন্তু সন্তানের মায়ের পরিচয় গোপন রাখা হয় আজও, যা বিশ্বের মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা সৃষ্টি করে।
পরবর্তীতে Ronaldo আরও তিন সন্তানের বাবা হন এর মধ্যে দুই সন্তান জন্মগ্রহণ করে সারোগেসির মাধ্যমে। পরে তিনি Georgina Rodriguez-এর সাথে সম্পর্কে জড়ান এবং একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেননি। এজন্যই Ronaldo প্রায়শই আলোচনায় থাকেন সেই সব Footballers Who Became Fathers Before Marriage–এর তালিকায়।
Ronaldo-র জীবনের অন্যতম সুন্দর দিক হলো তার সন্তানদের সাথে ঘনিষ্ঠতা। নিয়ম-শৃঙ্খলা, মূল্যবোধ, পরিশ্রম সবকিছুই তিনি সন্তানদের শেখান। ছেলেমেয়েদের সাথে অনুশীলন, ছুটি কাটানো, জন্মদিন উদযাপন সবক্ষেত্রেই তিনি একজন দায়িত্বশীল পিতা।
Georgina এবং Ronaldo-এর সম্পর্কও শক্তিশালী। যদিও তারা বিয়ে করেননি, কিন্তু তাদের পরিবারের গঠন, যুক্তি, নিবেদন সবই দেখায় যে ভালোবাসা কখনও কাগজে সীমাবদ্ধ থাকে না। এ কারণেই তিনি আধুনিক যুগের Footballers Who Became Fathers Before Marriage–এর অন্যতম প্রতীক।
1. John Mikel Obi

এই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন নাইজেরিয়ান ফুটবল লেজেন্ড John Mikel Obi। তার জীবন অন্যদের মতো চটকদার না হলেও, পরিবারকে কেন্দ্র করে তার দায়িত্ববোধ তাকে এই অবস্থানে নিয়ে আসে।
Mikel বহু বছর ধরে রাশিয়ান মডেল Olga Diyachenko-র সাথে সম্পর্কে আছেন। তাদের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে যমজ। বহু বছর একসঙ্গে থাকা এবং সন্তান লালনপালন করার পরও তারা এখনও বিয়ে করেননি। কিন্তু তাদের পরিবারের বন্ধন এতটাই শক্তিশালী যে সমাজের কেউই কখনো বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলে না।
Mikel পরিবারকে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে করেন। এমনকি তিনি একবার জাতীয় দলের ম্যাচও না খেলার সিদ্ধান্ত নেন শুধু সন্তানদের পাশে থাকার জন্য। এজন্যই তার নামও যোগ হয় সেইসব Footballers Who Became Fathers Before Marriage–এর তালিকায়।
Mikel-এর গল্প আফ্রিকা এবং ইউরোপের সংস্কৃতির মিলন ঘটিয়ে একটি আধুনিক সম্পর্কের উদাহরণ তৈরি করে যেখানে ভালোবাসা এবং দায়িত্বই পরিবারকে টিকিয়ে রাখে।
FAQs
1. বিয়ের আগে বাবা হওয়া কি ফুটবলারদের ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব ফেলে?
-> ক্যারিয়ারে সরাসরি কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। বরং অনেক খেলোয়াড় বলেছেন, সন্তান জন্ম তাদের আরও দায়িত্বশীল ও ফোকাসড করেছে।
2. কেন অনেক ফুটবলার বিয়ের আগে সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন?
-> সময়, সম্পর্কের স্থিতি, ব্যক্তিগত বিশ্বাস, এবং আধুনিক সম্পর্কের মুক্ত কাঠামোর কারণে অনেকেই বিয়ের আগেই পরিবার শুরু করেন।
3. এসব ফুটবলার কি সন্তানদের পূর্ণ দায়িত্ব নেন?
-> , তালিকার সবাই তাদের সন্তানদের লালন-পালনে অত্যন্ত সক্রিয় ও দায়িত্বশীল।
এই বিষয়টি কি ফুটবল দুনিয়ায় সাধারণ?
-> হ্যাঁ, আধুনিক সময়ে অনেক ফুটবলারের মধ্যে বিয়ের আগে সন্তান নেওয়া বেশ স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

